মি. হেনরি লামিনের ‘ডনগিরি’ | তদন্ত রিপোর্ট

বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৪৯ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম
মোহনগঞ্জ বাজারের সুইচগেট মোড়ে নিয়মিত সড়ক দুর্ঘটনা—দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপের দাবি এলাকাবাসীর সিলেটে ১৩ কোটি টাকার বালু ৩৮ লাখে বিক্রি জাফলং এএসআই রেজওয়ানকে ম্যানেজ করে বালু-পাথর হরিলুট রৌমারীতে লকডাউন বিরোধী কর্মকাণ্ডে তিনজন গ্রেফতার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে গান পাউডার ও ককটেল তৈরীর সরঞ্জামাদি সহ আটক ১ চাঁপাইনবাবগঞ্জ -২ (নাচোল-গোমস্তাপুর- ভোলাহাট) আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন পেলেন আমিনুল ইসলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে নবীন বরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন অনুষ্ঠিত নাচোলে ৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস-২০২৫ উদযাপন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ভাঙ্গুড়ায় হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক, পুলিশের উদাসীনতার অভিযোগ ভাঙ্গুড়ায় জরিনা রহিম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ
মি. হেনরি লামিনের ‘ডনগিরি’

মি. হেনরি লামিনের ‘ডনগিরি’

তামাবিল-জাফলংয়ে মন্ত্রীদের ছত্রছায়ায় রাজত্ব
তামাবিল-জাফলংয়ে মন্ত্রীদের ছত্রছায়ায় রাজত্ব

Manual3 Ad Code

◾তদন্ত রিপোর্ট প্রতিবেদক: সিলেটের গোয়াইনঘাট সীমান্তের তামাবিল ও জাফলং পাথর কোয়ারীর এক অঘোষিত সম্রাট মি. হেনরি লামিন। যিনি একাধারে ১৫ বছর আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী মন্ত্রীদের হয়ে ছত্রছায়ায় রাজত্ব করে গড়েছেন কোটি কোটি টাকা। টাকা ইনকামের পথ হিসাবে বেছে নিয়েছেন তামাবিল স্থলবন্দর ও জাফলং পাথর কোয়ারী।

সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ ও সাবেক প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদের কাছের লোক ছিলেন। ফলে তামাবিল স্থলবন্দর ও জাফলং পাথর কোয়ারীর লুটপাটকারী আওয়ামী লীগের নেতারা হেনরি লামিনকে সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা দিয়ে আসছেন। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে লুটপাট করেছেন কোটি কোটি টাকা। মন্ত্রীদের ছত্রছায়ায় থেকে করেছেন ‘ডনগিরি’। এই উপজাতি নেতার বিরুদ্ধে কেউ কখনো মুখ খুলে কথা বলার সাহস পায়নি। বর্তমানেও তামাবিল ও জাফলং পাথর কোয়ারীর অঘোষিত সম্রাট মি. হেনরি লামিন। তার ইশারায় চলছে সমগ্র ব্যবসা। চলছে লুটপাট ও চাঁদাবাজি। তিনি বর্তমানে লেবাসধারী বিএনপি নেতা।

গত ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ নেতার নিজের বাংলোতে রেখে ভারতে পালাতে সহযোগীতা করেছেন। বিনিময়ে হাতিয়ে নিয়েছেন কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। তিনি প্রকাশ্যে লুটপাটে অংশ না নিলেও তারই ম্যানেজার মকুল আহমদ সবকিছু দেখছেন। বকুলকে দিয়ে বর্তমানে জাফলং পাথর কোয়ারীর জুমপাড় এলাকায় একটি বিশাল পাথরের গর্ত করে এক্সেভেটর, ফেলুডার ও বোমা মেশিন দিয়ে অবৈধ ভাবে পাথর উত্তোলন করে আসছেন। যার ফলে দৈনিক লাখ লাখ টাকার হাতিয়ে নিচ্ছেন। তাদের এই পাথর উত্তোলনের ফলে গভীর গর্তে বিলীন হচ্ছে মানুষের বাড়ি-ঘর ও স্থাপনা। উপজাতি নেতার ভয়ে কেউ প্রতিবাদও করছে না। ফলে জুমপাড় এলাকায় প্রকাশ্যে ডান্ডব লীলা চালাচ্ছেন তার ম্যানেজার বকুল। সাথে জড়িত রয়েছেন একাধিক সাংবাদিক ও বহিস্কৃত বিএনপি নেতা স্বপন সিন্ডিকেটের সদস্যরাও।

Manual6 Ad Code

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গোয়াইনঘাট সীমান্তের তামাবিল স্থলবন্দরটি এক দশক ধরে নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল তামাবিল চুনাপাথর, পাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপ। এ গ্রুপের সভাপতি জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী ও আওয়ামী লীগ নতা সরোয়ার হোসেন ছেদু, অর্থ সম্পাদক জালাল উদ্দিন। বন্দরের নিয়ন্ত্রণ ছিল লিয়াকত আলী ও জালালের হাতে। পণ্য তোলা-খালাস থেকে শ্রমিকদের খরচ বাবদ প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা আদায় করতেন তারা। এদের সাথে ছিলেন তামাবিল পাথর আমদানীকারক গ্রুপের সমন্বয়কারী মি, হেনরি লামিন। ‘ভারতে পালিয়ে গিয়েও তামাবিল স্থলবন্দর কিভাবে লুটেপুটে খাওয়া যায় তা কিন্তু ভুলতে পারছেন না জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ব্যবসায়ী জালাল উদ্দিন। তিনি কৌশলে আদিবাসী নেতা হেনরি লামিনকে বন্দরের ব্যবসায়ী নেতা হিসেবে দায়িত্ব নিতে বলেন। যাতে কেউ বাধা দিলে সংখ্যালঘু হিসেবে ভারতের কাছে দেখাতে পারেন।

যেনও তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি নিষিদ্ধ হয়ে পড়ে। জালাল উদ্দিন এর জন্য বেচে নিয়েছেন অর্থ লোভী সমাজের কিছু পরিচিত মুখ।’ জালাল উদ্দিনের সাথে হেনরি লামিনের একটি ফোনআলাপ ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সরকার পতনের কয়েকদিনের মধ্যেই বিএনপি-জামায়াত সমর্থিতরা অফিস দখল করে নেন। এরপর থেকেই হেনরি লামিনের নেতৃত্বে শুরু হয় চাঁদাবাজি ও লুটপাট। কিন্তু এই লুটপাটকে কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না বন্দরের নিয়ন্ত্রক লিয়াকত আলী ও জালাল উদ্দিন। ফলে বার বার কমিটি গঠন করেও সফল হচ্ছেন না লুটপাটকারীরা।

একদিনের ব্যবধানে তামাবিল স্থলবন্দরে তিনটি কমিটি করা হয়েছে। এরই নেপথ্যে রয়েছেন সভাপতি জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী ও আওয়ামী লীগ নতা সরোয়ার হোসেন ছেদু, অর্থ সম্পাদক জালাল উদ্দিন।

অন্যদিকে রয়েছেন জেলা বিএনপির বহিস্কৃত নেতা শাহ আলম স্বপন। তারা কোন ভাবেই সিলেট জেলা বিএনপির পদবঞ্চিত নেতা রফিকুল ইসলাম শাহ পরানকে তামাবিল চুনাপাথর, পাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি হিসাবে মানতে নারাজ। জালাল উদ্দিন ও হেনরি লামিনের একটি অডিও বার্তায় তা একদম পরিস্কার। প্রথমইে জেলা বিএনপির পদবঞ্চিত নেতা রফিকুল ইসলাম শাহ পরানকে সভাপতি ও ওমর ফারুককে সাধারণ সম্পাদক করে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। সাথে সাথে পরদিন লেবাসধারী বিএনপি মি. হেনরি লামিনকে সভাপতি ও ইলিয়াস উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা বিএনপির বহিস্কৃত নেতা শাহ আলম স্বপন ২১ সদস্য বিশিষ্ট আরেকটি কমিটি প্রকাশ করান।

Manual1 Ad Code

কিন্তু বসে থাকেননি জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী ও আওয়ামী লীগ নতা সরোয়ার হোসেন ছেদু, অর্থ সম্পাদক জালাল উদ্দিনও তাদের বলয়ের সাইদুল ইসলাম জয়কে সভাপতি ও রুবেল আহমদ রাহীকে সাধারণ সম্পাদক করে ২০ সদস্য বিশিষ্ট আরেকটি কমিটির জন্ম দিয়েছেন। তাদের এমন কান্ড দেখে অবাক সাধারণ ব্যবসায়ীরা। কোন ভাবেই কেউই চাইছেন না তামাবিল স্থলবন্দর নিয়ন্ত্রণ হাত ছাড়া করতে। তামাবিল স্থলবন্দর নিয়ন্ত্রণ হাতে নিলে গড়ে তোলবেন সম্পদের পাহাড়। এমনই আশা-ভরসা নিয়ে সবাই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

সূত্রমতে, গত ১৭ আগস্ট তামাবিল আমদানিকারক গ্রুপের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম শাহপরানকে সভাপতি ও ওমর ফারুককে সাধারণ সম্পাদক করে ২৯ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করলে তা অস্বীকার করেন আরেক গ্রুপের ব্যবসায়ীরা। সাবেক ছাত্রদল নেতা আবুল হাসিমকে সভাপতি ও যুবদল নেতা জাহিদ খানকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩১ সদস্যের পাল্টা কমিটি ঘোষণা করেন তারা। এমনকি ওই দিন কানাডা থেকে লুৎফুর রহমানকে সভাপতি ও হেলুয়ার আহমদকে সাধারণ সম্পাদক করে আরেকটি কমিটি ঘোষণা হয়।

এ নিয়ে আগস্ট থেকে শুরু হয় উত্তেজনা। আর সবকিছুর মাস্টার মাইন্ড হলেন মি. হেনরি লামিন। তিনি আওয়ালী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের মিশনে নেমেছেন। ফলে বিএনপি নেতাদের কমিটিকে কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং তিনি নিজেই একটি কমিটির আত্মপ্রকাশ করেছেন। তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে বড় অংকের টাকার বিনিময় এই অবৈধ কমিটির নিউজ প্রকাশ করানো চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন।

Manual1 Ad Code

অভিযোগে রয়েছে, গত ৫ আগস্টের পর তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে ছাত্র-জনতার খুনি আওয়ামী লীগ নেতাদের ভারতে পালানোর সুযোগ করে দিয়েছেন মি. হেনরি লামিন। ফলে তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। কারণ তামাবিল স্থলবন্দর সম্পূর্ণ হেনরি লামিনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেখানে হেনরি লামিনের ইশারায় সবকিছু উলটপালট হয়। আওয়ামী লীগ নেতা ও মন্ত্রীদের সাথে হেনরি লামিনের একাধিক ছবি রয়েছে। তার সাথে আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে রয়েছেন একাধিক লেবাসধারী বিএনপি।

আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী মি. হেনরি লামিনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি কল রিসিভ না করায় বক্তব্য মিলেনি।

Manual5 Ad Code

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Add



© All rights reserved © tadantareport.com
Design BY Web WORK BD
ThemesBazar-Jowfhowo

Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code
error: Content is protected !!